হার্ভার্ডে সন্ধ্যা ১ নিছক বয়ান নয়; এইমাত্র ভারী অধ্যাপক এক তাঁর নিজস্ব আঁকিবুঁকি থেকে উদ্ধার করলেন মধ্যযুগের চটকদার রোমাঞ্চ; পানে ঠোঁট ...

আজফার হোসেন-এর দু’টি কবিতা

12:48 PM Editor 0 Comments

হার্ভার্ডে সন্ধ্যা


নিছক বয়ান নয়; এইমাত্র ভারী অধ্যাপক এক
তাঁর নিজস্ব আঁকিবুঁকি থেকে উদ্ধার করলেন
মধ্যযুগের চটকদার রোমাঞ্চ; পানে ঠোঁট লাল-করা
এক বুড়ি উঁকি দিলো; সে মুখ তো আমারই চেনার কথা,
অথচ তুমি আমাকে চিনিয়ে দিচ্ছো। মানচিত্রের
রাজনীতি এখন তোমার ইঙ্গিতেই ভাঙছে-গড়ছে
ঠিকানা-সীমানা; তোমার শেষ ফুটনোটে আমাকে
সাধ্যমতো ফোটাবার আকাঙ্ক্ষা আঁচ করতেই আমি হাই তুলি।
তখনও সন্ধ্যা যায়নি বুড়িয়ে হার্ভার্ডের চঞ্চল চত্বরে;
পুঁথির মৌ মৌ গন্ধ-মাখা বাতাসে উড়ে গেলো এক পাখি,
চেনা নয়, বোধ করি ক্যাথি’র রুমালের রঙ গায়ে মেখে
অট্টালিকার চূড়া থেকে আরেক চূড়ায় যাত্রা তার শেষ হলো।
আমি হাই তুলি। তখনও চলছে তোমার ছায়া-নাচ
অবিরাম; ঘড়ির কাঁটা ধরে খইয়ের মতো ফুটছে
তোমার শব্দরা, অথচ আমি আমার শরীরে হাত বুলাতেই
আঙুলে পেয়ে যাই থকথকে কালো রঙ, কারা যেন
থেকে থেকে লেপ্টে দেয়। আমার মায়ের শরীর, চিম্বুক পাহাড়ের
মাথায় দুপুর উপুর করে-নেওয়া রোদের ঝিলমিল রঙ-মাখা
পাখিদের আকাশভরা দেহ, সব কালো হয়ে আসে,
আমাকে তুমি চিনিয়ে দিচ্ছো আমারই ইতিহাস?
অবশেষে হাই তুলতে তুলতে ‘ওয়াইডনার’ লাইব্রেরির
পাঁজর-চেরা রাস্তা ধরে মূল ফটকের বাইরে বেরিয়ে এলেই
মনে হলো কারা যেনো আমাকে ঠিকঠাক মেপে নিচ্ছে,
তোমাদের উনুনে তখনও চলছে আমাদের ইতিহাসের রান্নাবান্না।


তোমার চোখের পাতাঃ
এক জমপেশে রূপক চোখ মারতে না মারতেই
পিছলে যায় চোরা চিহ্নের মতো
তোমার চোখের পাতাঃ
সন্ধ্যা কাঁপে অর্গানে থিরথির
ঘোলাটে পারদ মুহূর্তের মতো চমকায়
তোমার চোখের পাতাঃ
হিস্পানি মদ গাঢ় হতেই থাকে
ভরাট রাতের টকটকে গেলাসে
তোমার চোখের পাতাঃ
আয়নার মতো
দেখে নেই মানুষের পৃথিবীতে কতো মুখ আছে
তোমার চোখের পাতাঃ
মুহূর্তের উন্মীলনে
দাউ দাউ জ্বলতে থাকে আমার ইতিহাস।

0 comments:

Note: Only a member of this blog may post a comment.